অধিক কঠোর অথবা অতি সহজ কোনো বিষয় যেহেতু ভারসাম্যরহিত তাই এ ধরনের কোনো বিষয় বিশ্বময় গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে না। মধ্যমপন্থাই হচ্ছে উত্তম পন্থা, যা মানুষকে কাছে টানতে পারে অতিসহজে। মুসলিম উম্মত অতি মাত্রায় কঠোরতা অথবা অতি মাত্রায় ঢিলেমী থেকে বিমুক্ত উম্মত। কেননা অতি মাত্রায় কঠোরতা ধর্মকর্ম পালনে মানুষকে নিস্পৃহ করে ফেলে। আবার অতি মাত্রায় ঢিলেঢালা ভাব মানুষকে করে দেয় অকর্মন্য, অলস। তাই বিশ্বব্যাপী ওহী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আদর্শের প্রচার এবং বিশ্ববাসীর ওপর সাক্ষী হিসেবে দাঁড়ানোর যোগ্যতা একমাত্র মুসলিম উম্মাহরই রয়েছে।
আল্লাহ তা’আলা বলেন: ‘আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী উম্মত বানিয়েছি, যাতে তোমরা মানুষের ওপর সাক্ষী হও এবং রাসূল সাক্ষী হন তোমাদের ওপর’ । (সূরা আল বাকারা: ১৪৩)
ইমাম ইবনে জারীর আত-তাবারী রহ. বলেন, ‘আমার দৃষ্টিতে আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদীকে মধ্যম উম্মত বলার কারণ হলো, দীনের ক্ষেত্রে তারা মধ্যমপন্থী। না তারা বাড়াবাড়িকারীদের দলভুক্ত- যেমনটি করেছে খৃস্টানজাতি তারা ভীতিপ্রদর্শনের বেলায় বাড়াবাড়ি করেছে, ঈসা আলাহিইস্ সালামের ব্যাপারে তাদের বক্তব্যেও বাড়াবাড়ি করেছে। আর না তারা অবহেলা ও উপোকারীদের দলভুক্ত-যেমনটি করেছে ইয়াহুদী সম্প্রদায় কেননা তারা আল্লাহর কিতাবে পরিবর্তন এনেছে, তাদের নবীদেরকে হত্যা করেছে, তাদের রবের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে, উপরন্তু তাঁর সাথে তারা কুফরী করেছে। এর বিপরীতে উম্মতে মুহাম্মাদী হলো ভারসাম্যপূর্ণ ও মধ্যমপন্থী। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা তাদেরকে মধ্যম উম্মত বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর আল্লাহর কাছে মধ্যম বিষয়ই হলো সর্বোত্তম বিষয়।
ইসলামে মধ্যমপন্থা একটি সর্বব্যাপী ধারণা। আকীদা-বিশ্বাস, চিন্তাধারা, ইবাদত-বন্দেগী, মুআমালাত মুআশারাত, আইন ও বিধান, ভাব ও অনুভূতি, আত্মা ও শরীর, ব্যক্তিগত ও সামাজিক বিষয়াবলী, বুদ্ধি ও আবেগ, আকল ও কালব, আদর্শ ও বাস্তবতা এসব কিছুই মধ্যমপন্থার আওতাধীন।
রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:‘দীন হলো সহজ। দীনকে কেউ কঠিন করলে দীন তাকে পরাহত না করে পারে না’ (বুখারী)
কট্টরপন্থা বলতে বুঝায় কোনো বিষয়ে ভারসাম্যপূর্ণ অভিমত বা বিধান থাকা সত্ত্বেও একই বিষয়ে এমন অভিমতকে আপন করে নেয়া যা বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন। যারা এরূপ করে তাদের বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন।
তাই অহেতুকভাবে মুসলমানদেরকে কাফির ফতোয়া দেয়া, মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করা, হত্যাযজ্ঞ চালানো মারাত্মক অপরাধ। যারা এরূপ করে তাদের উচিত আল্লাহকে ভয় করা। শরীয়ত পালন ও বাস্তবায়নে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। নানা ধরনের অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে মুসলমানদের রক্তপাত থেকে বিরত থাকা।
Source: https://www.islamkingdom.com/bn
from প্রজন্ম ফোরাম https://ift.tt/2I2rRgC
0 comments:
Post a Comment