One can get information of Technology, Online income info, Health, Entertainment, Cooking & Recipe, Bye & Sale, Sports, Education, Exclusive news and many more in single bundle. ভান্ডার 24 থেকে আপনি পাচ্ছেন টেকনোলজি ইনফরমেশন, অনলাইনে ইনকাম ইনফরমেশন, হেলথ, এন্টারটেইনমেন্ট, কুকিং & রেসিপি, কেনা বেচা, স্পোর্টস, এডুকেশন, এক্সক্লুসিভ নিউজ ও আরো অনেক কিছু |

Wednesday, January 1, 2020

জীবন সংগ্রামে হার না মানা রাবেয়া

জীবন সংগ্রামে হার না মানা রাবেয়া

শাহীন রহমান

পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের পৈলানপুন গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব রাবেয়া খাতুন। জীবন সংগ্রামে হার না মানা এক মানুষ। তিনি আজীবন পরিশ্রম করে আত্মনির্ভরশীল হয়েছেন। ৩০ বছর ধরে ডিম বিক্রি করায় যিনি সবার কাছে পরিচিত ‘ডিম দাদি’ নামে।

সাত মাসের গর্ভবর্তী থাকা অবস্থায় স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়। সেখান থেকে কখনো পা্উরুটি, কখনো ডিম বিক্রি করে দুই সন্তানকে মানুষ করে বিয়ে দিয়েছেন। জমি কিনে বাড়ি করেছেন, কিছু জমি লিজ নিয়েছেন। কারো কাছে হাত পাততে হয়নি তাকে।

রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, ছোট বয়সে বিয়ে দিয়েছিলেন বাবা-মা। স্বামী আলিমুদ্দিন কৃষিকাজ করে যা উপার্জন করতেন; তাই দিয়ে সুখে কাটছিল তাদের দিন। বিয়ের বছর খানেকের মাথায় রাবেয়া খাতুন জন্ম দেন কন্যা সন্তানের। নাম রাখেন আজিরন খাতুন। এর কয়েক মাস পর আবার গর্ভবর্তী হন তিনি। সংসারের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে মতের অমিল হওয়ায় স্বামী আলিমুদ্দিন তাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। এরপর ভূমিষ্ঠ হয় ছেলে সন্তান। নাম রাখেন ফরহাদ হোসেন।

স্বামী ছেড়ে যাওয়ায় দুই সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাতে দিশেহারা হয়ে পড়েন রাবেয়া। গ্রামে ঘুরে ঘুরে শুরু করেন পাউরুটি বিক্রি। অনেক কষ্টে ছেলে-মেয়েকে বড় করে তোলার পর বিয়ে দেন। ভেবেছিলেন শেষ বয়সে একমাত্র ছেলে তাকে দেখেশুনে রাখবে। কিন্তু সেই আশাও পূরণ হয়নি তার। ছেলে বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকা শহরে পাড়ি জমান। খোঁজ রাখেন না মায়ের! যে সন্তানকে তিলে তিলে বড় করে তুলেছেন; সেই সন্তানের কাছে ঠাঁই না পেয়ে বাধ্য হয়ে আবার নেমে পড়েন রাস্তায়।

হাসিনুর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি রাবেয়া খাতুনকে একশত টাকা ধার দেন। সেই ধারের টাকা দিয়ে গ্রামেগঞ্জে ঘুরে ঘুরে দেশি হাঁস-মুরগির ডিম কিনে শহরে বিক্রি করা শুরু করেন। দীর্ঘ ৩০ বছরেরও অধিক সময় ধরে খালি পায়ে হেঁটে পৌর শহরের অলিগোলি ঘুরে ঘুরে ডিম বিক্রি করে আসছেন রাবেয়া। ডিম বিক্রির টাকা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি পাঁচ শতক জমি কিনেছেন। কয়েক শতক জমিও লিজ রেখেছেন। সবাই তাকে এখন ‘ডিম দাদি’ নামে চেনেন।

গত রোববার সকালে দেখা যায়, হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় কোলে একটা ঝুড়িতে কিছু সংখ্যক দেশি হাঁস ও মুরগির ডিম নিয়ে শহরে ঘুরে ঘুরে তা বিক্রি করছেন। রাবেয়া খাতুন জানান, তিনি সবসময় খালি পায়ে হেঁটে চলাফেরা করেন। কোনো গাড়িতে চড়েন না। সপ্তাহে চারদিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে ডিম কেনেন; বাকি দিনগুলো শহরে এসে বিক্রি করেন।

তিনি জানান, ৩৫ টাকা হালি ডিম কিনে বিক্রি করেন ৪০ টাকা দরে। গড়ে একদিনে ৫০ হালি ডিম বিক্রি করেন তিনি। সপ্তাহে ৭০০-৮০০ টাকা লাভ হয়। মাঝে মধ্যে ডিম ফেটে গেলে বা পচা বের হলে তাকে খেসারত দিতে হয়।

রাবেয়া খাতুনের আক্ষেপ একটাই, ছেলের কাছে ঠাঁই হয়নি তার; খোঁজ রাখেন না মেয়েও। তার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই।  জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি যেন কর্মের মধ্য দিয়ে পার করতে পারেন- এমন আশা তার।

গুনাইগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, রাবেয়া খাতুনের মতো জীবন-সংগ্রামী মানুষ সমাজে দৃষ্টান্ত। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘‘এমন মায়ের জন্য সন্তানদের গর্ব করা উচিত। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, তার সন্তানরা তাকে খোঁজ পর্যন্ত করেন না।’’



ঢাকা/বকুল



from Risingbd Bangla News https://ift.tt/2QzqybI
Share:

0 comments:

Post a Comment

Popular Posts

Recent Posts

Unordered List

Text Widget

Pages

Blog Archive

3i Template IT Solutions. Powered by Blogger.

Text Widget

Copyright © ভান্ডার 24 | Powered by 3i Template IT Solutions