
পদ্মা-যমুনার ডুবোচরে ১৯ কার্গোজাহাজ আটকা
পাবনা প্রতিনিধিপাবনার বেড়া উপজেলার কাজীরহাটের তিন কিলোমিটার ভাটিতে নাব্যতা সঙ্কটে পদ্মা-যমুনার ডুবোচরে আটকা পড়েছে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী বন্দরমুখী ১৯টি পণ্যবাহী কার্গোজাহাজ। আটকেপড়া জাহাজের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে।
নাব্যতা সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করায় পণ্যবাহী জাহাজ পূর্ণলোড নিয়ে বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে পৌঁছাতে পারছে না। মাঝ নদীতে আটকেপড়া জাহাজ থেকে লাইটার জাহাজে করে রাসায়নিক সারসহ বিভিন্ন পণ্য বাঘাবাড়ী বন্দরে আনা হচ্ছে।
বুধবার সকালে বেড়া উপজেলার কাজিরহাট ঘাটে রুপপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যার উজ্জ্বল হোসেন জানান, চট্রগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও মংলা বন্দর থেকে বাঘাবাড়ী নৌবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ১৯টি জাহাজ রাজধরদিয়া, চরশিবালয় ও নাকালির বিভিন্ন পয়েন্টে পদ্মা ও যমুনার ডুবোচরে আটকা পড়েছে।
আটকেপড়া কার্গোজাহাজগুলো হলো, এমভি জুয়েল, এমভি ফেয়ারি, ওটি আছিয়া বেগম, এমভি সুমাইয়া হোসেন, এমভি ফয়সাল, এমভি ফয়সাল, এমভি ফয়সাল-৮, এমভি ইব্রাহীম খলিল, জুয়েল, আল তায়েফ, এমভি আফিফা, এমভি ওয়ারিশ আহনাফ, সততা পরিবহন, মাজননী, বিসমিল্লাহ, আছিয়া পরিবহন, ভাই ভাই, আবু ছালেহ, এমভি জুয়েল।
কার্গোজাহাজগুলো রাসায়নিক সার, কয়লা, গম ও চাল নিয়ে বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে যাচ্ছিল। মোহনগঞ্জ থেকে কাজীরহাট পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার এলাকায় ১৫-১৬টি ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় স্রোতের টানে বালু ভাটিতে গিয়ে ডুবোচরের সৃষ্টি হচ্ছে। বিআইডাব্লিউটিএ যমুনা ও পদ্মা নদীতে ড্রেজিং না করায় আটকেপড়া জাহাজের সংখ্য বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বিআইডাব্লিউটিএ আরিচা অফিসের একটি সূত্রে জানা যায়, রাসায়নিক সার ও পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য ১০ থেকে ১১ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে এ নৌপথে কোথাও কোথাও ৮ থেকে ৯ ফুট পানির গভীরতা রয়েছে। আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে পানির স্তর কমে ৭ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা।
বাঘাবাড়ী নৌবন্দর থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত নৌপথের চরসাফুল্লা, নাকালিয়া, নাকালী, রাজধরদিয়া, নগরবাড়ীসহ ছয়টি পয়েন্টে নাব্যতা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
এমভি বিজয়’র মাস্টার জহির উদ্দিন স্বপন জানান, দৌলতদিয়া থেকে বাঘাবাড়ী নৌবন্দর পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার নৌপথের ছয়টি পয়েন্টে পানির গভীরতা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ থেকে ৯ ফুট। সরু হয়ে গেছে নৌচ্যানেল। মোহনগঞ্জ, পেঁচাকোলা পয়েন্ট কার্গোজাহাজ চলাচলের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই পয়েন্টে দ্রুত ড্রেজিং না করা হলে পণ্যবাহী ও জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বাঘাবাড়ী নৌবন্দর সূত্রে জানা যায়, বাঘাবাড়ী বন্দর থেকে উত্তরাঞ্চলে চাহিদার ৯০ ভাগ জ্বালানি তেল ও রাসায়নিক সার সরবরাহ করা হয়। আবার উত্তরাঞ্চল থেকে বাঘাবাড়ী বন্দরের মাধ্যমে চাল ও গমসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। এ নৌপথের ছয়টি পয়েন্টে নাব্যতা সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে বিপিসির বাঘাবাড়ী রিভারাইন অয়েল ডিপোর যমুনা কোম্পানির ম্যানেজার এ কে এম জাহিদ সরোয়ার জানান, বাঘাবাড়ীতে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি তেল কোম্পানির ডিপোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানি তেল মজুদ আছে।
জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। যমুনা ও পদ্মা নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা সঙ্কট নিরসনের জন্য বিআইডাব্লিউটিএ’কে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
পাবনা/শাহীন রহমান/বকুল
from Risingbd Bangla News https://ift.tt/37IYACa
0 comments:
Post a Comment