
কৃষকের সবুজ স্বপ্ন
এ কে সাজুসবজি চাষে বদলে গেছে মাঠের দৃশ্য। নওগাঁর মহাদেবপুরে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শীতকালীন সবজির সবুজের সমারোহ।
সবজি বিক্রি শুরু হয়েছে। কৃষকের হাসির ঝিলিক প্রস্ফুটিত হচ্ছে মরিচের ডগায়। ধনেপাতার সুভাস ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে বাতাসে। আলুর ফলও ভালো হচ্ছে।
ইট পাথরের শহর থেকে একটু দূরে বেরুলেই দৃষ্টিতে পড়ে কৃষকের স্বপ্ন বোনা ফসলের মাঠ। প্রাণ জুড়িয়ে যায় সবজি ক্ষেত দেখে। সকালে সূর্য ওঠার আগেই কৃষকরা হৃদয়ের টানে ছুটে আসেন জমিতে। কপি, টমেটো কিংবা লাউ ও শিমের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত।ক্ষেতে পানি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার, কীটনাশক প্রয়োগ, নিড়ানি দেয়াসহ সবজি ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক পদ্ধতিতে শীতকালীন সবজি চাষ করায় ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে অনেক কৃষকের। জমির পাশাপাশি অনেকে বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ করেছেন। আবার অনেক স্থানে গড়ে উঠেছে সবজি পল্লী। বিগত বছরের মত এবারও রোগ বালাই কম হওয়ায় আগাম শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে।
ভালো দাম পাওয়ায় হাজার হাজার কৃষক নতুন স্বপ্নে বিভোর। তারা ক্ষেতেই সবজি বিক্রি করছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এসব সবজি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উপজেলার সফাপুর, মাহিনগর, কুমিরদহ, কালনা, শেরপুর, এনায়েতপুর, মহিষবাথান, গোফানগর, নাটশাল, গোপালপুর, ফাজিলপুর, শিবগঞ্জ, সুলতানপুর, উত্তরগ্রাম, বামনসাতা, কর্ণপুর, পাটাকাটা, রামচরণপুর, কুঞ্জবন, মধুবনসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কৃষকের ক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের সবজি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, মুলা, লাউ, শিম, বরবটি, চালকুমড়া, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, ঝিংগা, পালংশাক, লালশাক, কলমিশাক, পুঁইশাক, ডাটা, করলা, শসা, ধনিয়া, ঢেঁড়শ, পাটশাক, পটল, খিরা, চিচিংগা, সরিষা শাক, ওল, গাজর, মটরশুটি, মুলাশাক, পুটাশাক।
উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের সবজি চাষী এনামুল কবির জানান, শীতকালীন সবজি চাষে খরচ কম লাগে। এতে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। এ বছর দুই বিঘা জমিতে বেগুন ও লাউ, এক বিঘায় বাঁধাকপি এবং ফুলকপি, ১০ কাঠা করে জমিতে শিম, টমেটো, মুলা এবং পাঁচ কাঠা জমিতে ধনেপাতা চাষ করেছেন।
একই গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় সবজি চাষে বেশি লাভবান হাওয়া যায়। তাই অন্য ফসল ছেড়ে সবজি চাষ করছি। এ বছর এক বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে চার হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত বাজারে বিক্রি ভালো হয়েছে।
উপজেলার নাটশাল গ্রামের সবজি চাষী কফিল উদ্দীন জানান, বাজারে সবজির দাম ভাল পাওয়া যাচ্ছে। তবে সার, কীটনাশক, বীজ ও পরিবহন খরচ বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকদের পরামর্শ ও সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। কৃষকদের আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর হিসেবে গড়ে তুলতে কৃষি বিভাগ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
নওগাঁ/এ কে সাজু/সাইফ
from Risingbd Bangla News https://ift.tt/36tfYdh
0 comments:
Post a Comment