One can get information of Technology, Online income info, Health, Entertainment, Cooking & Recipe, Bye & Sale, Sports, Education, Exclusive news and many more in single bundle. ভান্ডার 24 থেকে আপনি পাচ্ছেন টেকনোলজি ইনফরমেশন, অনলাইনে ইনকাম ইনফরমেশন, হেলথ, এন্টারটেইনমেন্ট, কুকিং & রেসিপি, কেনা বেচা, স্পোর্টস, এডুকেশন, এক্সক্লুসিভ নিউজ ও আরো অনেক কিছু |

Tuesday, January 28, 2020

আবারও ভিক্ষাবৃত্তিতে অনুদান পাওয়া মেকআপ আর্টিস্ট

আবারও ভিক্ষাবৃত্তিতে অনুদান পাওয়া মেকআপ আর্টিস্ট

রাহাত সাইফুল

সকাল নয়টা। কর্মজীবি মানুষ ঘর ছেড়ে বেরিয়েছেন। রাজধানীর দয়াগঞ্জ মোড়ে অনেকেই অপেক্ষা করছিলেন গণপরিবহনের জন্য। এক বৃদ্ধকে দেখলাম ঘুরে ঘুরে সাহায্য প্রার্থনা করছেন। শরীরের একপাশ অবশ। কথা বলতে পারছিলেন না ঠিকভাবে। লোকটিকে পরিচিত মনে হলো। হঠাৎ মনে পড়ল লোকটিকে এফডিসিতে দেখেছি।

এগিয়ে গিয়ে জানতে চাইলাম- তিনি মেকআপ ম্যান ছিলেন কিনা? উত্তর দিতে গিয়ে তার চেহারায় অপ্রস্তুত ভাব ফুটে উঠল। কিছুক্ষণ চুপ থেকে ছোট্ট করে বললেন, হ্যাঁ। লোকের ভিড়, ব্যস্ত গাড়ির ছুটে চলা এড়াতে তাকে নিয়ে একটি খাবার হোটেলে বসলাম। জানতে চাইলাম তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে। সমস্যা হলো তিনি স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারেন না। বেশিরভাগ কথা বলছিলেন ইশারায়।

মনে পড়ল এই ব্যক্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পাঁচলক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছিলেন। টাকা দিয়ে চিকিৎসা আর সংসারের খরচ চালিয়েছেন এতদিন। টাকা ফুরিয়ে যেতেই তাকে পুনরায় পথে নামতে হয়েছে। সুপার শপ ‘স্বপ্ন’ এক বছরের জন্য প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা সমমানের গৃহস্থালী পণ্য দিয়ে তাকে সহযোগিতাও করেছে। সেটিও অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানালেন তিনি।

কথোপকথনের এক পর্যায়ে জানলাম তার নাম কাজী হারুন। এখন তার জীবন চলছে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে, হাত পেতে। চিকিৎসাও অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে স্ত্রী মহুয়া আকতারকে নিয়ে দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর ফরিদাবাদ বস্তিতে থাকেন। তিনটি বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে ঘর ভাড়া দেন মহুয়া। আর ভিক্ষা করে জীবনযাপনের খরচ চালান হারুন। ২০০৯ সালে স্ট্রোক হয় তার। এতে শরীরের ডান পাশ প্রায় পুরোটা অকেজো হয়ে যায়। অসুস্থ হওয়ার কারণে এফডিসিতে আর কাজে ফিরতে পারেননি। ছিটকে পড়েন চলচ্চিত্র জগৎ থেকে। শুরু হয় অর্থকষ্ট। অনেকটা বাধ্য হয়েই ২০১১ সাল থেকে ভিক্ষা করতে শুরু করেন। অভাবের তাড়নায় এরই মধ্যে বিক্রি করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার হিসেবে পাওয়া সোনার মেডেল।

এ নিয়ে গতবছর বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরেই মূলত প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের জন্য মনোনীত হন তিনি। এ ঘটনায় খুব খুশি হয়েছিলেন হারুনসহ চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সবাই। কিন্তু সেই টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায় আবারও পথে নামতে হয়েছে তাকে। নিয়তির উপর প্রচণ্ড অভিমান করে একবার বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ একমাস পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। কমলাপুর রেল স্টেশনে দিন-রাত ভিক্ষা করে, রাতে ইট মাথায় দিয়ে ঘুমিয়েছেন। পাঁচ হাজার টাকা জমিয়ে বাসায় ফিরে আসেন। এরপর থেকে পুনরায় ভিক্ষা করেই সংসার চালাচ্ছেন তিনি।

১৯৭৯ সালে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছিলেন হারুন। ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ সিনেমায় রূপসজ্জাকর হিসেবে কাজ করে প্রশংসিত হন। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’। এই সিনেমায় কাজের জন্য পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়াও ‘অন্য জীবন’, ‘শঙ্খমালা’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’, ‘জীবন সংসার’সহ শতাধিক সিনেমায় কাজ করেছেন হারুন। হারুনের হাতের ছোঁয়ায় বদলে গেছে অনেক অভিনয়শিল্পীর চেহারা। অন্যকে সাজাতে গিয়ে নিজের জীবন সাজাতেই ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। বিত্ত-বৈভবের দিকে না তাকিয়ে জীবনের অমূল্য সময় কাটিয়েছেন এফডিসিতে। কিন্তু এখন কেউ তার খোঁজ রাখেন না। তিনি জানেন না এই অভাবের শেষ কোথায়?



ঢাকা/রাহাত সাইফুল/তারা



from Risingbd Bangla News https://ift.tt/313zjj8
Share:

0 comments:

Post a Comment

Popular Posts

Recent Posts

Unordered List

Text Widget

Pages

Blog Archive

3i Template IT Solutions. Powered by Blogger.

Text Widget

Copyright © ভান্ডার 24 | Powered by 3i Template IT Solutions