
অভিজিৎ হত্যা : ৫ বছরেও শেষ হয়নি বিচার
মামুন খানপাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বিজ্ঞান মনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার বিচার।
অভিজিৎ রায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। ২০১৫ সালে বাবা-মাকে দেখতে স্ত্রীসহ ঢাকায় আসেন। একুশে বইমেলায় তার দুইটি বই প্রকাশিত হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে স্ত্রীসহ তার ওপর দুর্বত্তরা হামলা করে। স্ত্রী বেঁচে গেলেও নিহত হন অভিজিৎ রায়। পাঁচ বছরেও এ হত্যাকাণ্ডে বিচার শেষ হয়নি। তবে এ বছর মামলাটির বিচার শেষ হবে এমনটিই আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। সর্বশেষ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। ওই দিন তিন পুলিশ কর্মকর্তা রমনা থানার এসআই মজিবর রহমান, শাহবাগ থানার এসআই সোহেল রানা এবং এএসআই খলিলুর রহমান সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হন। কিন্তু বিচারক ছুটিতে থাকায় ২ মার্চ মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়।
মামলা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট টাইব্যুনালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ান খান জাকির বলেন, ‘৪ বছর লেগেছে মামলাটির তদন্তে। এরপর মামলাটি আমাদের আদালতে এসেছে। চার্জগঠন করে মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাক্ষীদের হাজির করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আশা করছি, এ বছরই মামলাটির বিচার শেষ হবে। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে। ভূক্তভোগী পরিবার ন্যায়বিচার পাবে।’
আসামি শফিউর রহমান ফারাবীর আইনজীবী জায়দুর রহমান বলেন, ‘অভিজিৎ রায়কে নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে ফারাবীকে মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে সাইবারে মামলাও হয়েছে। সেই মামলায় সম্প্রতি সে খালাস পেয়েছে। আশা করছি, এ মামলায়ও সে খালাস পাবে।’
অভিজিৎ রায়ের পরিবারের সাথে গত রোববার থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কথা বলতে রাজি হননি তারা।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় টিএসসির সামনে অভিজিৎ ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার ওপর হামলা চালনো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান অভিজিৎ। গুরুতর আহত হন বন্যা।
ওই ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক ড. অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলাটিতে গত বছর ১ আগস্ট ছয় আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। মামলাটিতে চার্জশিটভূক্ত ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে অভিজিৎ রায়ের বাবা অধ্যাপক ড. অজয় কুমার রায়সহ ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। অজয় রায় গত বছরের ২৮ অক্টোবর আদালতে সাক্ষ্য দেন। ছেলে হত্যার বিচার শেষে হওয়ার আগেই অজয় রায় গত ৯ ডিসেম্বর মারা যান।
এ মামলার আসামিরা হলেন- বরখাস্তকৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, আবু সিদ্দিক সোহেল (সাংগঠনিক নাম সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব), মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (সাংগঠনিক নাম শাহরিয়ার), আরাফাত রহমান (সাংগঠনিক নাম সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস্) ও শাফিউর রহমান ফারাবী। আসামিদের মধ্যে প্রথম দুজন পলাতক আছেন। অপর আসামিরা কারাগারে আছেন।
ঢাকা/মামুন খান/ইভা
from Risingbd Bangla News https://ift.tt/381O1ch
0 comments:
Post a Comment