ঈদের দিনে বাসায় অতিথি আসবেই। নিজের থাকার জায়গাটা সবার সামনে একটু সুন্দর করে তুলে ধরতে কে না চায়? নতুন পর্দা, চাদর, কুশন কভার দিয়ে প্রতিবারই কিছু না কিছু নতুনত্ব আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এর থেকে ভিন্ন কিছু করে যদি পাল্টে ফেলা যায় অন্দরের চেহারাটাই, তবে কেমন হয়?
‘ঘরের একটা বড় অংশজুড়ে আছে দেয়াল। দেয়ালে পরিবর্তন এনেই ঘরের সাজে নতুনত্ব আনা সম্ভব’—বলছিলেন অন্দরসজ্জাবিদ গুলশান নাসরিন চৌধুরী। এত অল্প সময়ে দেয়াল পরিবর্তনের কথা শুনে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। কম সময়ে ও অল্প খরচে কীভাবে ঘরের দেয়ালে বৈচিত্র্য আনা যায়, সেই পরামর্শই বাতলে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওয়ালপেপার হতে পারে কম সময়ে ঘরের সাজ বদলানোর খুব ভালো উপায়। এখন বাজারে নানা রকমের ওয়ালপেপার পাওয়া যাচ্ছে। অন্দরসজ্জাবিদ সাবিহা কুমু বললেন, চাইলে এই কাজটি দু–এক দিনের মধ্যেই করে ফেলা যায়। পুরো বাড়িতে ওয়ালপেপার লাগানোরও দরকার নেই। ঈদের আগে বসার ঘর, লবি বা পারিবারিক বসার ঘরের দেয়াল মুড়ে দিতে পারেন ওয়ালপেপারে। যদি মনে করেন, তবে শুধু দেয়ালের একটা দিকও এ কাজের জন্য বেছে নিতে পারেন। এখন ‘টেকশ্চার’ ওয়ালপেপার খুব চলছে। এই কাগজগুলো হাত দিয়ে স্পর্শ করলে উঁচুনিচু ও খসখসে বোধ হয়। এ ছাড়া এমবোস করা ওয়ালপেপারও আধুনিক।
কোন ঘরে কেমন ওয়ালপেপার
বসার ও শোবার ঘরের দেয়ালে ফুলেল নকশার ওয়ালপেপার ভালো দেখাবে। বসার ঘরে টেকশ্চার বা এমবোস খারাপ লাগবে না। বসার ঘরের ওয়ালপেপারে কোনো প্রাকৃতিক দৃশ্য থাকলেও চলবে। অন্যান্য আসবাবের সঙ্গে মানিয়ে গেলে জ্যামিতিক নকশার কাগজ ব্যবহার করতে পারেন। চাপা সাদা, সোনালি, হালকা কমলা, হালকা নীল, গোলাপি, বেগুনি বা সবুজ রঙের ওয়ালপেপার ঘরে লাগাতে পারেন। ঘর ছোট হলে হিজিবিজি নকশার ওয়ালপেপার এড়িয়ে যাওয়া উচিত। আর ছোট ঘর বড় দেখাতে সাদা বা যেকোনো হালকা রঙের কাগজ ব্যবহার করুন। ঘর বড় হলে কমলা ও হলুদের মাঝামাঝি কোনো রং বেছে নিতে পারেন।
খাবার ঘরে ওয়ালপেপারের ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করলেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, সেখানে নোংরা হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সে ক্ষেত্রে শুধু বসার ঘরটা প্লাস্টিক পেইন্ট করিয়ে নিতে পারেন। সময় বেশি লাগবে না। অন্য কোনো ঘরেও বড় কোনো খালি দেয়াল থাকলে কেবল একটি দেয়াল রং করে সেখানে কালার ইল্যুশন করানো যেতে পারে। এটি অনেকটা ওয়ালপেপারের মতোই।
বাড়িতে ঢুকতেই প্রবেশপথ পার হতে হয়। সে জায়গার দেয়াল রং করে ঝোলাতে পারেন নানা রকম মুখোশ বা ঝুলন্ত গাছ। গুলশান নাসরিন চৌধুরীর মতে, করিডর চওড়া হলে লাল, হলুদের মতো গাঢ় রং এবং সরু হলে চাপা সাদা বা ক্রিম রং করানো যেতে পারে। তার মাঝে ছিটা ছিটা রঙিন ফুল এঁকে দিলে খুব ভালো দেখাবে।
সাবিহা কুমু দেয়ালে বৈচিত্র্যময় নকশার তাক বানিয়ে সেখানে ছোট গাছ ও শোপিস রাখার পরামর্শ দিলেন। সব সময় দেয়ালে যে ছবি বা শোপিস ঝোলে, ঈদের সময় তা নামিয়ে রেখে নতুন কিছু রাখুন। ঘরের সাজের সঙ্গে মানিয়ে নকশিকাঁথা, দৃশ্য বা নতুন ফ্রেমে সুন্দর কোনো আলোকচিত্র দেয়ালে ঝোলাতে পারেন। খাবার ঘরে ফল বা সবজির আঁকা ছবি রাখাই ভালো। শোয়ার ও বসার ঘরে ফুলেল কোনো দৃশ্য ভালো দেখাবে। বসার ঘরে প্রাকৃতিক দৃশ্য বা বিমূর্ত ছবিও সুন্দর দেখায়। ছবির ওপর ‘ট্র্যাক লাইট’ দিয়ে আলো ফেললে সুন্দরভাবে সেগুলো ফুটে উঠবে।
ওয়ালপেপার কোথায় পাবেন?
রাজধানীর হাতিরপুল, গুলশানে বাড়ির ফিটিংস পাওয়া যায়, এমন দোকানে ওয়ালপেপার পাবেন। আর পাওয়া যাবে মহাখালী উড়ালসেতুর নিচে কয়েকটি দোকানে।
দরদাম
ওয়ালপেপার বর্গফুট ও রোল হিসেবে বিক্রি হয়। প্রতি রোলের দাম ২ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে। আর বর্গফুট হিসেবে দাম পড়বে ১২ থেকে ৫৫ টাকা পর্যন্ত।
Source: prothom-alo.com
0 comments:
Post a Comment