One can get information of Technology, Online income info, Health, Entertainment, Cooking & Recipe, Bye & Sale, Sports, Education, Exclusive news and many more in single bundle. ভান্ডার 24 থেকে আপনি পাচ্ছেন টেকনোলজি ইনফরমেশন, অনলাইনে ইনকাম ইনফরমেশন, হেলথ, এন্টারটেইনমেন্ট, কুকিং & রেসিপি, কেনা বেচা, স্পোর্টস, এডুকেশন, এক্সক্লুসিভ নিউজ ও আরো অনেক কিছু |

Wednesday, October 30, 2019

প্রেমের ফাঁদে নিঃস্ব ভিখারি আয়েশা

প্রেমের ফাঁদে নিঃস্ব ভিখারি আয়েশা

মামুন খান

আয়েশা খাতুন। অন্য সবার মতই তার বেড়ে ওঠা। অভাবের সংসারেও তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল মা-বাবার। কিন্তু সর্বনাশা টাইফয়েড তার জীবনকে এলোমেলো করে দিয়েছে।

যত বড় হতে থাকে তত তার জীবনে অন্ধকারে ছেয়ে যায় পৃথিবী।  পাঁচ বছর বয়সে টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে আয়েশা পঙ্গুত্ব বরণ করে। এক সময় তার কাছ থেকে সরে যায় স্বজনরাও। উপায় না পেয়ে বেঁচে থাকতে শুরু করে ভিক্ষাবৃত্তি।

হাঁটু ও হাতের ওপর ভর করে আদালতে আসেন তিরি। দূর থেকে দেখে মনে হবে কেউ হামাগুড়ি দিচ্ছেন। কাছে গিয়ে মনে হলো যন্ত্রণায় তার শরীর কাঁপছে।  সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় তার সিঁড়ি দিয়ে উঠতে।  তবুও তিনি আদালতে আসেন বিচারের আশায়। জসিমের প্রতারণায় তিনি আজ সর্বশান্ত।  সম্প্রতি আদালতে তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

আয়েশা বলেন, একদিন সন্ধ্যায় ভিক্ষা শেষে বাসায় ফিরছিলাম।  এ সময় অপরিচিত এক ব্যক্তি কিছু টাকা দিয়ে আমার ব্যাপারে জানতে চাইল। সেদিন বেশি কথা হয়নি।  এরপরের দিন আবারও সেই ব্যক্তি আমার পিছু নেয়।  নানা কথা বলেন। এভাবে কয়েকদিন চলে যায়।  এরপর একপর্যায়ে তিনি আমাকে ভালোবাসার কথা জানায়। বিয়ের আশ্বাস দেয় আমি তার কথায় কান্নায় ভেঙে পড়ি। তারপর কি যে হয়ে গেল নিজেও বুঝতে পারিনি।

তিনি বলেন, ‘সেদিন মনে করেছিলাম পঙ্গুত্বের কারণে সবাই যখন এড়িয়ে চলছে, তখন তিনি এগিয়ে এলেন। তিনি তো ফেরেশতার মত। কিন্তু সে যে অন্য কারণে আমাকে বিয়ে করার কথা বলেছে তা বুঝতে পারিনি। ’

শারীরিকভাবে অক্ষম আয়েশা বলেন, জীবন বাঁচানোর তাগিদেই ভিক্ষা করি। কিন্তু ওই মানুষটা আমাকে লোভ দেখিয়ে বিয়ে করে আমার সবকিছু হাতিয়ে নেয়। সে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। খেয়ে-না খেয়ে জমানো সব টাকা নিয়ে গেছে। সে আমাকে অনেক নির্যাতন করে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমি জীবনে অনেক কঠিন সময় পার করেছি। নিষ্ঠুরতারও মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু আমার সন্তানের জীবনের এমন দিন আসুক আমি তা চাই না। তাই তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছি।

 

 

এখন আয়েশার বয়স ৪৪ বছর। সেই ছয় বছর বয়স থেকে হাঁটু গেড়ে চলেন। ভিক্ষা করেন। তিনি জানান, জীবনে বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না। ভিক্ষা করে জমানো দশ লাখ টাকার ওপর নজর পড়ে ভোলার লালমহনের জসিম উদ্দিনের। সে নানাবিধ প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৪ সালে আমাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর একটি কন্যা সন্তান হয়। ব্যবসা করবে বলে আমার জমানো সব টাকা নিয়ে নেয় জসিম।  এরপর ছুঁড়ে ফেলে চলে যায়।

জানা যায়, ২০১৭ সালে আয়শা ভরণ-পোষণ ও দেনমোহর না দেয়ার অভিযোগে মামলা করে। সে মামলায় আদালত এককালীন ২ লাখ এবং প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা দেয়ার জন্য আদেশ দেয়। এ রায়ের পর আয়শার ওপর যৌতুকের জন্য নির্যাতন শুরু করে জসিম। এ অভিযোগে সম্প্রতি ঢাকার আদালতে আরো একটি মামলা করেন আয়েশা। এর পরিপেক্ষিতে আদালত জসিমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আদালত থেকে ভাটারা থানায় ওই পরোয়ানা গেলেও পুলিশ জসিমকে ধরছে না বলে আয়শার অভিযোগ।

তিনি বলেন ‘আমি গরীব-অসহায় তাই পুলিশ আসামি ধরছে না। ভাই আপনারতো সাংবাদিক, বলেন তো কোথায় গেলে আমি সঠিক বিচার পাব? আমার মেয়েটা এখনো ওর বাবার জন্য কান্নাকাটি করে। ’

আয়েশার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. জাহিদুর রহমান মিয়া বলেন, সম্পূর্ণ মানবিক কারণে ওনার (আয়েশা) পক্ষে মামলা করছি। মামলার জন্য তাকে টাকা দিতে হয়নি। বিয়ের নামে আয়েশার সঙ্গে অনেক বড় ধরনের প্রতারণা করেছে জসিম। মামলার ওয়ারেন্ট থানায় গত ৬ অক্টোবর গেলেও পুলিশ এখনো তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি জসিম উদ্দিনের সাথে আয়েশা খাতুনের বিয়ে হয়। পরের বছর ১৪ জানুয়ারি তাদের পরিবারে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।  নাম রাখা হয় তাসমিয়া আক্তার লাবণ্য।  আয়েশা খাতুন সাত বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে যান। অস্বচ্ছ্বল পরিবারে জন্ম নেয়ায় ছোটবেলা থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনযাপন করতেন। প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে তিনি বিয়ে করতে অনিচ্ছুক ছিলেন। আয়েশার সারা জীবনের সঞ্চয়কৃত ১৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে প্রতারণা ও ছলনার আশ্রয় নিয়ে আসামি তাকে বিয়ে করে। আসামি এর আগেও দুটি বিয়ে করে।

আয়েশা ওই টাকা এবং নিজ ও সন্তানের ভরণ পোষণের দাবি করেন। ১৪ লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছেন মর্মে উল্লেখ করে আরও দুই লাখ টাকা দিলে সংসার করবে বলে জানায়। ভরণ পোষণ না দেয়ায় জসিমের বিরুদ্ধে মামলা করেন আয়েশা। আদালত আসামিকে ভরণ পোষণ বাবদ দুই লাখ ৬১ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা দেয়ার রায় দেন। এতে আসামি বাদীর ওপর ক্ষুব্ধ হন। তিনি বাদীর বাসায় গিয়ে মামলা তুলে নিতে বলেন এবং আরও দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।



ঢাকা/মামুন খান/সাইফ



from Risingbd Bangla News https://ift.tt/2Nuo3pp
Share:

0 comments:

Post a Comment

Popular Posts

Recent Posts

Unordered List

Text Widget

Pages

Blog Archive

3i Template IT Solutions. Powered by Blogger.

Text Widget

Copyright © ভান্ডার 24 | Powered by 3i Template IT Solutions