One can get information of Technology, Online income info, Health, Entertainment, Cooking & Recipe, Bye & Sale, Sports, Education, Exclusive news and many more in single bundle. ভান্ডার 24 থেকে আপনি পাচ্ছেন টেকনোলজি ইনফরমেশন, অনলাইনে ইনকাম ইনফরমেশন, হেলথ, এন্টারটেইনমেন্ট, কুকিং & রেসিপি, কেনা বেচা, স্পোর্টস, এডুকেশন, এক্সক্লুসিভ নিউজ ও আরো অনেক কিছু |

Tuesday, October 29, 2019

কবরে লাশ খেকো কচ্ছপ!

কবরে লাশ খেকো কচ্ছপ!

শাহিদুল ইসলাম

অনেক সময় কবর থেকে মানুষের চিৎকার শোনা যায়। স্বজনরা কেউ কেউ ভূত-প্রেত মনে করে ভয় পান! অনেকে মনে করেন, কবরের ভেতরে মৃতের উপর অত্যাচার চলছে। আবার অনেকে ভাবেন অশরীরি আত্মার কারসাজি। সম্প্রতি একাটি প্রাণির ছবি এবং তার ডাক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে- ওই ভুতূরে শব্দ আসলে এই প্রাণির কারসাজি। এ প্রসঙ্গেই আজকের এই লেখা।

‘অলৌকিক নয়, লৌকিক’ প্রবীর ঘোষের পাঠকপ্রিয় গ্রন্থ। ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির এই সম্পাদক বহু রহস্যাবৃত অলৌকিক ঘটনার বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন সব আপাত অলৌকিকই মূলত লৌকিক। সত্যি কি তাই? মনে নেয়া আর মেনে নেয়া এক নয়। যে কারণে বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলায় পেণ্ডুলামের মতো দুলতে থাকা লোকের অভাব নেই এই ভুবনে। কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ তো বলেই গেছেন: সব রহস্যের ভেদ করতে নেই। কিছু রহস্য থাকুক রহস্য হয়ে। এ কারণেও পৃথিবী সুন্দর!

লেখার শুরুতে যে প্রাণির ছবির কথা বলা হচ্ছিল সেখানে ছিল একটি ভিডিও বার্তা : ‘এই জন্তুটির বাংলা নাম ‘কবর বীর্যু’। এদের সাধারণত কবরস্থানে পাওয়া যায়। এরা কবরস্থানের মাটির নিচে ইঁদুরের মতো গর্ত করে থাকে। এরা দিনের আলোয় বের না হবার কারণে লোকের চোখে পড়ে না। এরা রাতের বেলা কবর স্থানে মৃতদেহ খায় আর এমন আওয়াজ করে যে সবাই ভাবে ওখানে হয়তো কোনো ভূত প্রেত আছে। যে লোকেরা এই প্রাণির আওয়াজ শুনে ভূত, প্রেত বা আত্মার আওয়াজ ভেবে ভুল করেন, ভীত হন তাদের উদ্দেশ্যে এই পোস্ট। ভিডিওটিতে সেই প্রাণির আওয়াজ শুনে মন থেকে কুসংস্কার দূর করুন।’

সন্দেহ নেই, কুসংস্কার দূর করতেই এই পোস্ট। কিন্তু পোস্টে স্পষ্ট করে বলা নেই এই প্রাণির বৈজ্ঞানিক নাম বা সঠিক ধাম। ধরাধামে কিম্ভূত বস্তু বা প্রাণির অভাব নেই। জাকারবার্গের এই যুগে ভাইরাল হওয়ারও নেই সীমা-পরিসীমা। সুতরাং পাঠক চলুন জেনে নেই কবর বীর্যু বৃত্তান্ত।

কবর বীর্যু মূলত এক প্রজাতির কচ্ছপ। বৈজ্ঞানিকভাবে একে ম্যাক্রোসিলিস টেমিনিকি বা এম টেমিনিকি বলা হয়। তবে বিশ্বব্যাপী এটি অ্যালিগেটর স্ন্যাপিং টার্টেল নামে পরিচিত। কারণ অ্যালিগেটর বা কুমিরের মতো এর দেহের উপরিভাগ খাঁজকাটা; এদের দাঁত ও চোয়াল কুমিরের মতো শক্তিশালী। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ডাচ প্রাণিবীদ জ্যাকব টেমিনিকি প্রাণিটিকে শনাক্ত করেন। তার নামানুসারে এর বৈজ্ঞানিক নামকরণ করা হয়। সেলিড্রাইড প্রজাতির এই কচ্ছপের বাস উত্তর আমেরিকা; বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের মিষ্টি পানির জলাশয়গুলোতে। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর অঞ্চলের ফ্লোরিডা, ইস্ট টেক্সাস, কানসাস, ইলিনয়, ইন্ডিয়ানার ডোবা-নালায় বাস করে এরা। তবে ডিম পাড়ার সময় নারী প্রজাতির সঙ্গে খোলা মাঠে বাসা বাঁধে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এই প্রজাতির কচ্ছপ খুব বেশি দেখা যায় না। ফলে বাংলাদেশের কবরে বা এশিয়া মহাদেশে এদের দেখার সম্ভাবনা কম।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ্ আল মাসুদ বলেন, প্রাণিটি কচ্ছপের তিনশ প্রজাটির মধ্যে একটি। তারপরও ভিডিওতে যে কথাগুলো বলা হয়েছে এর কোনোটিই প্রাণিটির বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মেলে না। এর উপরিভাগে সরীসৃপের মতো খোলস আছে। পা ও বুকের গঠন বলে দেয় এটি সরীসৃপ জাতীয় প্রাণি। আর সরীসৃপের দাঁত থাকে না। ফলে এটি কখনো ইঁদুরের মতো গর্ত করতে পারবে না। প্রাণিটির খোলস, বুক ও পায়ের গঠন লক্ষ্য করলেই স্পষ্ট যে, এদের চলার গতি ইঁদুরের মতো দ্রুত হবে না। তাছাড়া সরীসৃপ জাতীয় প্রাণি, যারা ডাঙ্গায় বাস করে তারা মূলত তৃণভোজী।

যদিও সামুদ্রিক কচ্ছপ সর্বভূক হতে পারে। এটি নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। সেই গুজবে হাওয়া দিয়েছে কচ্ছপটির অদ্ভূত আকৃতি। দেখতে কিম্ভূতকিমাকার হলেও অ্যালিগেটর স্ন্যাপিং টার্টেল অন্যান্য প্রজাতির চেয়ে বেশ নিরীহ। প্রাণিটিকে গোবেচারাও বলা যেতে পারে। সুতরাং যে বেচারা কষ্ট করে তাকে নিয়ে ভিডিও তৈরি করেছেন সেটি সম্পূর্ণ সঠিক নয়।

তথ্য আরো রয়েছে। যেমন- এই প্রজাতির একটি পূর্ণ বয়স্ক কচ্ছপ লম্বায় ৩৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। মজার বিষয় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এদের দেহের আকার বাড়তেই থাকে। ফলে ওজন নির্দিষ্টভাবে বলা যায় না। খাদ্যাভাসের দিক দিয়ে এরা শিকার ধরে খেতে অভ্যস্ত। মাছ, কাঁকড়া, অন্যান্য উভচর প্রাণী, সাপ, শামুক ছোট ছোট জলজ উদ্ভিদ, জলজ পাখি এদের খাদ্য তালিকার শীর্ষে। তবে খাদ্য সংকটে পড়লে এরা অন্যান্য প্রজাতির কচ্ছপ ও ছোট আকারের কুমিরও শিকার করে। চিড়িয়াখানায় যেসব অ্যালিগেটর স্ন্যাপিং টার্টেল রাখা হয় তারা গরুর মাংস, মুরগি এবং শূকরের মাংস খায়। এরা গরমে থাকতে অপছন্দ করে। ফলে কবরে থাকার প্রশ্নই ওঠে না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. আব্দুল আলীম বলেন, ‘সরীসৃপ জাতীয় প্রাণির খোলসের উপরের অংশকে Carapace এবং নিচের অংশকে Plastron বলে। এসবের যে বৈশিষ্ট্য তা এই প্রাণির খোলসের রং এবং এর দেহের রং দেখেই বুঝা যাচ্ছে। কবরে বাস করলে কারো না কারো চোখে পড়ত। এছাড়া ময়নাতদন্ত করতে অনেক সময় পুরনো লাশ তোলা হয় তখনও তো কারো চোখে পড়েনি এমন প্রাণি! এটি বয়স্ক কচ্ছপ তাই এমন দেখাচ্ছে। এমন কচ্ছপ সাধারণ মানুষ কম দেখায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে মনে করি।’

এছাড়াও ভিডিও’র শব্দ সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ড. আব্দুল আলীম। একটি অ্যালিগেটর স্ন্যাপিং টার্টেল ১২ বছর বয়সে পূর্ণতা লাভ করে। এদের পূর্ণ জীবনকাল বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা হলেও ধারণা করা হয় এরা ১২০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। বিশ্বব্যাপী প্রাণি অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো এই প্রজাতির কচ্ছপকে বিপদাপন্ন প্রাণির তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করেছে। এদের সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রে আইন রয়েছে।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন: জাহিদ সাদেক

 

ঢাকা/মারুফ/তারা



from Risingbd Bangla News https://ift.tt/36irqsc
Share:

0 comments:

Post a Comment

Popular Posts

Recent Posts

Unordered List

Text Widget

Pages

Blog Archive

3i Template IT Solutions. Powered by Blogger.

Text Widget

Copyright © ভান্ডার 24 | Powered by 3i Template IT Solutions