
যশোর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনডেমনিটি নাটক মঞ্চায়িত
রাইজিংবিডি.কম‘ওয়ান বাংলাদেশ’ এর আয়োজনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শিত হয়ে গেল মান্নান হীরা রচিত নাটক ‘ইনডেমনিটি’।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে প্রদর্শিত হয় নাটকটি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য এক মহা কলঙ্কের দিন, শোকের দিন। এই দিন বাংলাদেশ তথা স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা মৃত্যুর নেশায় বুঁদ হয়। নির্মমভাবে হত্যা করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের। এই হায়েনাদের থেকে রেহাই পায়নি শিশু রাসেলও। বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা। এই নির্মম ঘটনা আমরা সবাই জানি।
সেইদিনের মাত্র ৪১ দিন পর ২৬ সেপ্টেম্বর জারি করা হয় ‘ইনডেমনিটি’ বা ‘দায়মুক্তি’ আইন অধ্যাদেশ (যদিও তৎকালীন সাংবিধানিক আইনে প্রেসিডেন্ট কোনো অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা রাখেন না, যার মাধমে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার তো দূরের কথা, ঐ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়ার পথও বন্ধ করে দেয়া হয়। ঘৃণিতভাবে সেই হত্যাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই অধ্যাদেশকে আরো পাকাপোক্ত করার জন্য এবং হত্যাকারীদের চিরতরে বাঁচাতে ১৯৭৯ সালের ৯ জুলাই ৫ম সংশোধনী এনে এটাকে আইনে রূপান্তর করা হয়।
একজন মানুষকে খুন করা হবে, অথচ তার বিচার চাওয়া যাবে না। পক্ষান্তরে খুনিরা দম্ভভরে খুনের দায় স্বীকার করে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াবে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ পদমর্যাদায় ভূষিত হবে কোনো সভ্য দেশে এসব ভাবাই যায় না।
তবে আশার বিষয় হলো, ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর এই কলঙ্ক থেকে মুক্তি দিতে সংবিধানের ‘ইনডেমনিটি’ আইন বাতিল করা হয়, যা দেশ ও জাতির এক ভয়ঙ্কর কালিমা দূর করে।
ইনডেমনিটির বিষয়টা এখনও অনেক মানুষের কাছে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়। অনেকের কাছেই এখনো অজানা ইতিহাসের এই কালো অধ্যায়টি। সর্বসাধারণের কাছে সহজভাবে ইনডেমনিটির বীভৎসতা তুলে ধরার জন্য ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ এর আয়োজনে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিটি অঞ্চলে ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ থেকে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সারা বাংলাদেশের ১২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টায় নাটক ‘ইনডেমনিটি’ স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় মঞ্চস্থ হয়।
নাটকে অভিনয় করেছে সজিবুর রহমান, নিশাত জাহান তন্নি, আকিব, ফেরদৌস, নিলয়, ত্রিবেদী, অনুভব, লিপি, মাহমুদ হাসান সৈকত এবং রচনায় ছিলেন মান্নান হীরা, নির্দেশনায় কামরুল হাসান রিপন এবং সার্বিক সহোযোগিতায় ছিল যশোর বিবর্তন শাখা
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধরে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই ছাত্রদের প্রধান লক্ষ থাকতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আজকের এই নাটক থেকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে কারা জড়িত তা তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে যারা জড়িত, তাদের খুব দ্রুত বিচারের আওতায় এনে বাংলাদেশকে কলঙ্ক মুক্ত করতে হবে।’
যবিপ্রবি/সজীবুর রহমান/হাকিম মাহি
from Risingbd Bangla News https://ift.tt/2n9VvrL
0 comments:
Post a Comment