
জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে কালেঙ্গা বনাঞ্চলে ৫৫ হাজার চারা রোপণ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধিহবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা বনাঞ্চলটি একটি সংরক্ষিত চিরহরিৎ বন। এটি প্রায় ১৬ হাজার একর জমির মধ্যে অবস্থিত। এ রেঞ্জে রেমা, কালেঙ্গা, ছনবাড়ি, রশিদপুরসহ রয়েছে চারটি বিট ও ক্যাম্প অফিস।
সম্প্রতি এই বনাঞ্চলে পর্যায়ক্রমে ৫৫ হাজার চারা রোপণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনবিভাগ। এতে করে এই বনের জীববৈচিত্র্য ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যটন সমাগম আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমনিতেই এই বনের শান্ত-সবুজ নয়নাভিরাম প্রকৃতি যে কোনো মানুষের মনই কেড়ে নিবে। তার ওপর এখানে রয়েছে টিয়া, ময়না, শালিক, বক, বুলবুলি, চড়াইসহ ১৬৭ প্রজাতির পাখির বিচরণ। সারাদিন এসব পাখির মধুর কলকাকলী আর ছোটাছুটি অন্য কোথাও মেলা ভার। এজন্য বলা হয়ে থাকে এই বনটি দেশের পাখি দর্শনের শ্রেষ্টতম স্থান।

এছাড়া, এখানে পর্যটক আকর্ষণে নানাভাবে কাজ করছে বনবিভাগ। তাদের সুবিধার জন্য এখানে রিসোর্ট রয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো চিন্তার কারণ নেই। এমন তথ্য বনবিভাগ নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে কালেঙ্গার রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আলা উদ্দিন জানান, করোনায় বর্তমানে পর্যটক আসা বন্ধ। এ পরিস্থিতির মধ্যেই কালেঙ্গা পাহাড়ের টিলায় টিলায় রোপণ করা হবে ফলজ ও বনজ প্রায় ৫৫ হাজার গাছের চারা। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জুন মাসের মধ্যে চাপালিশ, হরতকি, আমলকি, তিন প্রকারের জামসহ নানা প্রজাতির চারা রোপণ করার কথা রয়েছে। এ চারাগুলো রোপণ করা হলে কালেঙ্গার রূপবৈচিত্র্য আরো বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে এখানে বাস করা জীবদের আবাসস্থল আরো বৃদ্ধি পাবে। এতে করে এখানকার পশু-পাখিদের স্বাভাবিক প্রজনন স্থল বৃদ্ধি পাবে। ফলে এখানে তারা আরো ভালভাবে বেড়ে উঠবে।
এছাড়া, এই বনাঞ্চলে চারা রোপণের বিষয়টিকে বেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন এখানকার পরিবেশ প্রেমিকসহ বন গবেষকরা। তারা মনে করেন, পরিবেশ সুন্দর ও বনের ঐতিহ্য রক্ষায় গাছের চারা রোপণের বিকল্প নেই।

এ বিষয়ে বন গবেষক আহমদ আলী বলেন, কালেঙ্গা রেঞ্জের চারটি বিটের মধ্যে রেমা, ছনবাড়ি, রশিদপুর ও কালেঙ্গায় লাখ লাখ বৃক্ষ রয়েছে। এছাড়া, বনাঞ্চলে নানা প্রজাতির প্রাণির বসবাস আছে। এ স্থানটি দুর্গম হওয়ায় আজোও বনটি টিকে রয়েছে। এখানো আরো বৃক্ষ রোপণ করা হলে তা এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র রক্ষার জন্য তা আরো সহায়ক হবে। এছাড়া, এই বনের মূল আকর্ষন যে বিভিন্ন রকমের পাখি তা আরো বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে ৫৫ হাজার গাছের চারা রোপণ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এটি খুবই যুগোপযোগী।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, কালেঙ্গা বন ঘিরে বিভিন্ন রকমের উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে এখানে রাস্তা উন্নয়নের কাজের পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে ৫৫ হাজার চারা রোপণের চলছে। সংরক্ষিত এ বনাঞ্চলে কীভাবে আরো বেশি পর্যটক সমাগম করা যায়, সেভাবে উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে বনাঞ্চলটিকে।
রাস্তা পাকাকরণ হলে এবং করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার পর এই এলাকায় পর্যটক বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক।
মামুন/বুলাকী
from Risingbd Bangla News https://ift.tt/2yONui7
0 comments:
Post a Comment